1 . ইব্রাহিম কার্দির পরিচয় অল্প কথায় দেওয়া সম্ভব নয়। চলুন ইতিহাস থেকে ঘুরে আসি। পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধ সংগঠিত হয় ১৭৬১ সালে মুসলিম এবং মারাঠা বাহিনীর মধ্যে। ভারতের হরিয়ানা প্রদেশের অন্তর্গত পানিপথ নামক স্থানে এ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। ইতিপূর্বে এ স্থানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। যার প্রথমটি হয়েছিল বাবর এবং ইব্রাহিম লোদীর মাঝে। যা ইতিহাসে পানিপথের প্রথম যুদ্ধ নামে পরিচিত। এ যুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমেই ভারতে মুঘল বংশের গোড়া পত্তন হয়। পানি পথের দ্বিতীয় যুদ্ধ সংগঠিত হয় হিন্দু রাজা হেমচন্দ্র হিমু এবং বৈরাম খানের ( আকবর তখন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিল তাই তার হাতে সমস্ত দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল) মাঝে। এবার আসল কথায় আসি, পানি পথের ৩য় যুদ্ধে মুসলমানদের পক্ষে ছিল আহমদ শাহ আবদালি, নবাব নজিবুদ্দৌলা, নবাব সুজাউদ্দৌলা এবং মেহেদী বেগ কন্যা জোহরা বেগম। অন্যদিকে মারাঠা বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন পেশোয়া, রঘুনাথ রাও, সদাসিব রাও এবং ইব্রাহিম কার্দি (জোহরা বেগমের জামাই) অর্থাৎ মুসলিম শিবিরে নেতৃত্বদানকারী জোহরা বেগমের স্বামী হচ্ছেন ইব্রাহিম কার্দি।  ইব্রাহিম কার্দির একসময় কর্মসংস্থান ছিল না। তিনি মারাঠা বাহিনীতে যোগদান করেন এবং স্বীয় যোগ্যতায় তিনি পদাধিকার লাভ করেন। নিজ স্বামীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ হচ্ছে দেখে জোহরা বেগম বিপাকে পড়েন এবং গোপনে তার সাথে সাক্ষাৎ অব্যাহত রাখেন। তিনি ইব্রাহিম কার্দিকে মারাঠা শিবির ত্যাগ করে মুসলিম শিবিরে যোগদান করতে চাপ দিতে থাকেন। জোহরাকে ইব্রাহিম ভালোবাসলেও আদর্শগত দিক থেকে ইব্রাহিম অনড় ছিলেন। তাই তিনি মারাঠাদের দুর্দিনে তাদেরকে ছেড়ে আসতে অস্বীকার করেন।  ভয়ংকর এবং বিধ্বংসী যুদ্ধে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হলেও মুসলমানরা জয়লাভ করেন। ইব্রাহিম কার্দি ধরা পড়ে মুসলমান বন্দিশালায় আসেন। জোহরা বেগম তার মুক্তির জন্য যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি আহমদ শাহ আবদালির কাছে অনুরোধ করেন। সম্মতিক্রমে মুক্তির ফরমান নিয়ে জোহরা বেগম কারাগারে গেলে ইব্রাহিম কার্দিকে মৃত দেখতে পান।

  • Attach answer script
View Answer Discuss in Forum Workspace Report