কোনো কিছুর স্বাভাবিক বা কাল্পনিক অনুকৃতিবিশিষ্ট শব্দের রূপকে ধ্বন্যাত্মক শব্দ বলে। এ জাতীয় ধ্বন্যাত্মক শব্দের দুইবার প্রয়োগের নাম ধ্বন্যাত্মক দ্বিরুক্তি। ধ্বন্যাত্মক দ্বিরুক্তি দ্বারা বহুত্ব, আধিক্য ইত্যাদি বোঝায়। ধ্বন্যাত্মক দ্বিরক্তি শব্দ কয়েকটি উপায়ে গঠিত হয়। যেমন :
১. মানুষের ধ্বনির অনুকার : ভেউ ভেউ - মানুষের উচ্চস্বরে কান্নার ধ্বনি ট্যা ট্যা হি হি
২. জীবজন্তুর ধ্বনির অনুকার : ঘেউ ঘেউ (কুকুরের ধ্বনি) মিউ মিউ (বিড়ালের ডাক)
কুহু কুহু (কোকিলের ডাক) কা কা (কাকের ডাক)
৩. বস্তুর ধ্বনির অনুকার : ঘচাঘচ (ধান কাটার শব্দ) মড়মড় (গাছ ভেঙে পড়ার শব্দ)
ঝমঝম (বৃষ্টি পড়ার শব্দ) হু হু (বাতাস প্রবাহের শব্দ)
৪. অনুভূতিজাত কাল্পনিক ধ্বনির অনুকার : ঝিকিমিকি (উজ্জ্বল্য)। ঠা ঠা (রোদের তীব্রতা), কুট কুট (শরীরে কামড় লাগার মতো অনুভূতি) মিনমিন, পিটপিট, ঝি ঝি
ধ্বন্যাত্মক দ্বিরুক্তি গঠন
১. একই (ধ্বন্যাত্মক) শব্দের অবিকৃত প্রয়োগ : ধবধব, ঝনঝন, পটপট্
২. প্রথম শব্দটির শেষে আ যোগ করে : গপাগপ, টপটপ, পটাপট
৩. দ্বিতীয় শব্দটির শেষে ই যোগ করে : ধরাধরি, ঝমঝমি, ঝনঝনি
৪. যুগ্মরীতিতে গঠিত ধ্বন্যাত্মক শব্দ : কিচিরমিচির (পাখি বা বানরের শব্দ) টাপুর টুপুর (বৃষ্টি পতনের শব্দ)
হাপুসহুপুস (গোগ্রাসে কিছু খাওয়ার শব্দ)
৫. আনি - প্রত্যয় যোগেও বিশেষ্য দ্বিরুক্তি গঠিত হয় : পাখিটার ছটফটানি দেখলে কষ্ট হয়।
তোমার বকবকানি আর ভালো লাগে না।
ধ্বন্যাত্মক দ্বিরুক্ত শব্দের ব্যবহার (বিভিন্ন পদরূপে)
১. বিশেষ্য : বৃষ্টির ঝমঝমানি আমাদের অস্থির করে তোলে।
২. বিশেষণ : নামিল নভে বাদল ছলছল বেদনায়।
৩. ক্রিয়া : কলকলিয়ে উঠল সেথায় নারীর প্রতিবাদ।
৪. ক্রিয়া বিশেষণ : চিকচিক করে বালি কোথা নাহি কাদা।