জন্মের সময় বাচ্চার মাথা অনেক বড় হলে তাকে Macrocephalus বলা হয় ।
প্রতি ১০ হাজার নবজাতকের মধ্যে দুই থেকে পাঁচজন এই রোগ নিয়ে জন্মাতে পারে পথেঘাটে প্রায়ই শরীরের তুলনায় অনেক বড় মাথাবিশিষ্ট শিশু দেখা যায়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে সুচিকিৎসা থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের শিশুকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি ও ব্যবসা করতে দেখা যায় আমাদের দেশে; রয়েছে নানা কুসংস্কারও। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই সমস্যার নাম হাইড্রোকেফালাস। ‘হাইড্রো’ অর্থ পানি আর ‘কেফালাস’ হলো মাথা। মস্তিষ্কে পানি জমে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়। আর প্রতি ১০ হাজার নবজাতকের মধ্যে দুই থেকে পাঁচজন এই রোগ নিয়ে জন্মাতে পারে।
আমাদের মস্তিষ্কের কেন্দ্রে রয়েছে কতগুলো গহ্বর বা ভেন্ট্রিকল, যেখান থেকে প্রতিদিন ৪৫০ সিসি পরিমাণ সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড বা মস্তিষ্কের বিশেষ তরল তৈরি হয়। এর মধ্যে ৩০০ সিসি পানি নির্দিষ্ট পথে প্রবাহিত হয়ে রক্তে মিশে যায় আর বাকি পানিটুকু মস্তিষ্কের ভেতর - বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। যদি কোনো কারণে এই পানিপ্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে যায় বা অতিরিক্ত পানি তৈরি হতে থাকে, তখন তা জমে মাথা বড় হয়ে যায়। এই পানির চাপে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় বা পাতলা হয়ে যেতে থাকে।
যেসব কারণে পানি চলাচলের পথ সরু বা বন্ধ হতে পারে, সেগুলো হলো জন্মগত ত্রুটি, মাতৃগর্ভে থাকাকালে সংক্রমণ, মস্তিষ্কের সংক্রমণ বা মেনিনজাইটিস, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টিকারী কোনো টিউমার, সিস্ট ইত্যাদি।
পানিপ্রবাহের বিকল্প ব্যবস্থা করা বা পানি বের করাই হলো মূল চিকিৎসা। এর জন্য দুই ধরনের পদ্ধতি আছে—ভিপি সান্ট অপারেশন ও এন্ডোসকোপিক থার্ড ভেন্ট্রিকুলোস্টমি। চিকিৎসা না করা হলে পরবর্তী সময়ে নানা জটিলতা হতে পারে, যেমন: খিঁচুনি, বুদ্ধিবৃত্তি হ্রাস, স্নায়ু দুর্বলতা ইত্যাদি। ১৮ মাস বয়সের আগেই অথবা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস বা মস্তিষ্ক ক্ষয় হয়ে যাওয়ার আগেই অস্ত্রোপচার করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।