বাংলাদেশের বিখ্যাত মনিপুরী নাচ সিলেট অঞ্চলের।
অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগ পর্যন্ত সংঘটিত বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের শিকার হয়ে এবং যুদ্ধজনিত কারণে ভারতের উত্তর - পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যের অধিবাসীরা দেশত্যাগ করে পাক - ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আশ্রয় গ্রহণ করে। পার্শ্ববর্তী আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলায়, ত্রিপুরা রাজ্যে এবং বাংলাদেশে ব্যাপক সংখ্যক মণিপুরী অভিবাসন ঘটে। বার্মা - মণিপুর যুদ্ধের সময় (১৮১৯ - ১৮২৫) তৎকালীন মণিপুরের রাজা চৌরজিৎ সিংহ, তার দুই ভাই মারজিৎ সিংহ ও গম্ভীর সিংহসহ সিলেটে আশ্রয়গ্রহণ করেন। যুদ্ধ শেষে আশ্রয়প্রার্থীদের অনেকেই স্বদেশে ফিরে যায়, কিন্তু বহু মণিপুরী তাদের নতুন স্থানে স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যায়। বাংলাদেশে আসা মণিপুরীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, ময়মনসিংহের দুর্গাপুর, ঢাকার মণিপুরী পাড়া এবং প্রধানত বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বসতি গড়ে তোলে। বর্তমানে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় মণিপুরী জনগোষ্ঠীর লোক বাস করে। মণিপুরীদের সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী। মণিপুরী সংস্কৃতির উজ্জ্বলতম দিক হলো মণিপুরী নৃত্য যা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।