আয়কর আমাদের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিত্তি ও অনুষঙ্গ। সরকারের রাজস্ব আয়ের একটি বড় খাত আয়কর। নাগরিকদের দেয়া কর থেকে যে আয় হয়, সরকার রাষ্ট্রের উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, আমাদের দেশের সক্ষম অনেকে আয়কর দেয় না। দেশের মোট সক্ষম জনসংখ্যার অনুপাতে মাত্র ৫২ লাখ ইটিআইএনের (রিটার্ন জমা দেন মাত্র ২০-২২ লাখ) সংখ্যাটি নিতান্তই হতাশাব্যঞ্জক। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে আয়করদাতার সংখ্যা বাড়াতেই হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আয়কর প্রদান ও আদায়ের হার বৃদ্ধি করতে হবে। যাদের আয়সীমা কর দেয়ার মধ্যে রয়েছে, তাদের উচিত সময়মতো কর পরিশোধ করা। কর ফাঁকি কিংবা কর দিতে অনীহা দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। মূলত যাদের মধ্যে কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা রয়েছে, তারা রাষ্ট্রকে ফাঁকি দিচ্ছেন না, আদতে নিজেকেই ফাঁকি দিচ্ছেন। আয়কর ফাঁকি দেয়ার অর্থ সরকার কর্তৃক পরোক্ষ করের আওতা বাড়িয়ে রাজস্ব আদায় করে নেয়া এবং সেটা ধনী-দরিদ্র সবার ওপর আরোপ করা হয়।
সুনীল অর্থনীতি বা Blue Economy অর্থনীতির এমন একটি বিষয় যেখানে একটি দেশের সামুদ্রিক পরিবেশ কিংবা সামুদ্রিক সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষন নিয়ে আলোচনা করা হয়। সুনীল অর্থনীতি বা ব্লু-ইকোনমি হচ্ছে সমুদ্রের সম্পদনির্ভর অর্থনীতি। সমুদ্রের বিশাল জলরাশি ও এর তলদেশের বিভিন্ন প্রকার সম্পদকে কাজে লাগানোর অর্থনীতি। অর্থাৎ, সমুদ্র থেকে আহরণকৃত যে কোন সম্পদ দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হয়, তাই ব্লু-ইকোনমির বা সুনীল অর্থনীতির পর্যায়ে পড়বে। সমুদ্র পৃথিবীর অন্যতম মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। সমুদ্র, মাছ এবং মৎস্য সম্পদের মাধ্যমে খাবার চাহিদা মেটায়, মানুষ এবং পণ্য পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও সমুদ্র নানা ধরনের প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ যেমন বালি, লবণ, কবাল্ট, গ্রাভেল এবং কপার ইত্যাদির আধার হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং তেল ও গ্যাস আহরণ ক্ষেত্র হিসেবে সমুদ্র প্রয়োজন হয়। এসব উপাদান সমষ্টিকেই বলা হয় সুনীল অর্থনীতি (Blue Economy)। সুনীল অর্থনীতির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করা, দেশের সম্পদ বৃদ্ধি করা, সামাজিক পুঁজির সৃষ্টি করা, আয় বাড়ানো এবং সর্বোপরি পরিবেশে সঞ্চয়-বিনিয়োগের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি করা
৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ শতবর্ষব্যাপী বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ (Bangladesh Delta Plan 2100) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে অনুমোদন লাভ করে। জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাব্য প্রভাব প্রশমনে এটি প্রণয়ন করা হয়। পরিকল্পনা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞরা। পরিকল্পনায় প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঝুঁকি বিবেচনায় দেশে মোট ৬টি হটস্পট [উপকূলীয় অঞ্চল, বরেন্দ্র ও খরাপ্রবণ অঞ্চল, হাওড় এবং আকস্মিক বন্যাপ্রবণ অঞ্চল, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল, নদী অঞ্চল ও মোহনা, এবং নগরাঞ্চল] চিহ্নিত করা হয়।
বছরের কোনো এক সময়ে একটি নির্দিষ্ট উপলক্ষে কোনো স্থানে বইয়ের স্টল সাজিয়ে কিছু দিনের জন্য বই প্রদর্শন এবং বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হলে তাকে বইমেলা বলা হয়। আমাদের দেশে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপলক্ষে বইমেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এদের মধ্যে একুশের বইমেলা বিশেষভাবে উল্লেযোগ্য। বাংলা একাডেমি একুশে বইমেলার আয়োজন করে থাকে। সার্বিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ১৯৮৫ সাল থেকে এই মেলার প্রচলন হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মৃতিকে বাঙালি জাতির মানসে চিরা জাগরুক করে রাখা এবং জনগণের মাঝে বইয়ের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির উদ্দেশ্যই এই মেলার আয়োজন। বর্তমানে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে এই মেলার পরিধি বৃদ্ধি পেয়ে পার্শ্ববর্তী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিস্তৃত হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে অনুষ্ঠিত একুশের বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলায় পরিণত হয়েছে। সারা দেশ থেকে আসা লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে এই বইমেলা প্রাঙ্গণ। মেলার পরিচ্ছন্ন-সুন্দর, বর্ণোজ্জ্বল স্টলগুলো সাজানো থাকে। স্টলগুলোতে শোভা পায় নতুন পাতার গন্ধে মোড়ানো নতুন নতুন বই। একুশের বইমেলায় প্রতিদিন কোনো না কোনো বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। নতুন বই প্রকাশ উপলক্ষে প্রতিদিনই আয়োজন করা হয় বিভিন্ন সেমিনার, কবিতা পাঠের আসর, আলোচনা চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেলাজুড়ে বিরাজ করে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। একুশের বইমেলায় মেলা চত্বরকে বিভিন্ন ভাষা শহিদ যেমন সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, শফিউরসহ বিভিন্ন খ্যাতনামা কবি-সাহিত্যিকদের নামে ভাগ করা হয়। এই মেলায় 'শিশু কর্নার নামে শিশুদের জন্য আলাদা জায়গা রাখা হয়। সেখানে শিশুদের উপযোগী ছড়া, গল্প ও শিশুতোষ বই রাখা হয়। ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারি জুড়ে চলে উৎসবমুখর এই মিলনমেলা। সারাদেশ থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ গভীর আগ্রহ নিয়ে বই কিনতে আসে এই মেলায়। মেলা শেষ হলেও দর্শক ও পাঠকের মন থেকে এ মেলার আমেজ সহজে কাটে না। তাই তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে, কখন তাদের মাঝে এ সময়টি আবারও ফিরে আসবে।
বাংলা ভাষায় যে অব্যয় শব্দগুলো কখনো স্বাধীন পদ রূপে, আবার কখনো শব্দ বিভক্তির ন্যায় বাক্যে ব্যবহৃত হয়ে হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে, সেগুলোকে অনুসর্গ বলে ।