496 . বৈশ্বিক উষ্ণতা (প্রবন্ধ রচনা করুন)

  • বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ (Global Warming)

    বিশ্ব উষ্ণায়ন হলো জলবায়ু পরিবর্তনের একটি বিশেষ ঘটনা। সাধারণত সময় বা কারণ-নিরপেক্ষ হলেও বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ বলতে মূলত ইদানীং কালের উষ্ণতা বৃদ্ধিকেই নির্দেশ করা হয় এবং এটি মানুষের কার্যক্রমের প্রভাবে ঘটেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের রূপরেখা সম্মেলন বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে মানুষের কারণে সৃষ্ট, আর জলবায়ুর বিভিন্নতাকে অন্য কারণে সৃষ্ট জলবায়ুর পরিবর্তন বোঝাতে ব্যবহার করে। কিছু কিছু সংগঠন মানুষের কারণে পরিবর্তনসমূহকে মনুষ্যসৃষ্ট (anthropogenic) জলবায়ুর পরিবর্তন বলে।

    কোনো কোনো অঞ্চল বিপজ্জনক মাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে পড়বে এবং সেই সঙ্গে সমুদ্রের পানি বেড়ে বহু এলাকা প্লাবিত হবে। এ কারণে সেসব জায়গা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে এবং খাদ্য উৎপাদন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। বিভিন্ন প্রজাতির অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়বে তাদের চিরচেনা আবহাওয়া বদলের কারণে। বর্তমানে গ্রীষ্মে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও শীতকালে তীব্র শীত এবং কোনো কোনো সময় অনাকাঙ্ক্ষিত গরম, শীতকালে মুষলধারে বৃষ্টি, বৃষ্টির দিনে কম বৃষ্টি, অকাল বন্যা, বন্যার দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান, শিলাবৃষ্টি এ দেশের আবহমান আবহাওয়ার পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করছে।

View Answer Discuss in Forum Workspace Report

497 . স্মার্ট বাংলাদেশ (প্রবন্ধ রচনা করুন)

  • স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে স্বাভাবিকভাবে বোঝায় প্রযুক্তিনির্ভর নির্মল ও স্বচ্ছ তথা নাগরিক হয়রানিবিহীন একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণ প্রক্রিয়া, যেখানে ভোগান্তি ছাড়া প্রত্যেক নাগরিক পাবে অধিকারের নিশ্চয়তা এবং কর্তব্য পালনের সুবর্ণ এক সুযোগ। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখাকে চার ভাগে ভাগ করে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।

    স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকনোমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি-এ শব্দগুলোর সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমেই স্মার্ট বাংলাদেশ থিওরিকে বাস্তবে রূপায়ণ করা সম্ভব, যার মূল সারমর্ম হলো-দেশের প্রত্যেক নাগরিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবে, উইথ স্মার্ট ইকনোমি; অর্থাৎ, অর্থনীতির সব কার্যক্রম আমরা এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিচালনা করব। স্মার্ট গভর্নমেন্ট ইতোমধ্যে আমরা অনেকটা করে ফেলেছি। সেটিও করে ফেলব। আর আমাদের গোটা সমাজটাই হবে স্মার্ট সোসাইটি।

    এ বিবেচনায় ২০২১ থেকে ৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনাও প্রণয়ন শুরু হয়ে গেছে, অর্থাৎ ’২১ থেকে ’৪১ পর্যন্ত সময়ে কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে, তার একটা কাঠামো পরিকল্পনা বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই প্রণয়ন করে ফেলেছে, যা জনগণের জন্য অন্যতম আশীর্বাদ বয়ে আনবে। অন্যদিকে ২০৪১ সালেই শেষ নয়, ২১০০ সালেও এ বঙ্গীয় বদ্বীপ যেন জলবায়ুর অভিঘাত থেকে রক্ষা পায়, দেশ উন্নত হয়, দেশের মানুষ যাতে ‘সুন্দর, সুস্থ ও স্মার্টলি’ বাঁচতে পারে, সেজন্য ডেল্টা প্ল্যান করে দেওয়ার কথা বলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

    স্মার্ট বাংলাদেশ কী এবং কীভাবে তা অর্জিত হতে পারে, তা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, ২০৪১ সাল নাগাদ আমাদের দেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশের পরিকল্পনা এ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্ত, কেননা উন্নত বিশ্বের দেশগুলো তো এরই মধ্যে স্মার্ট দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, এমনকি অনেক উন্নয়নশীল দেশও স্মার্ট দেশে রূপান্তরের পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছে, তাই দেশের উন্নতি ও অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হলে দেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যেতে হবে। আগামীতে যেসব দেশ প্রযুক্তি ব্যবহারে এগিয়ে থাকবে, তারাই ব্যবসা-বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক লেনদেন এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় নিজেদের নিয়ে যেতে পারবে।


    দেড় যুগ আগে বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশের মতোই ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল, যার শতভাগ সফলতা এখন দৃশ্যমান। বিগত করোনা মহামারির ক্ষয়ক্ষতি বাংলাদেশ অনেক উন্নত দেশের চেয়েও সুন্দরভাবে সামাল দিতে পেরেছে, যার অনেক কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়ন। ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি বড় সুবিধা হচ্ছে, দেশের সবকিছু উন্নত বিশ্বের মতো প্রযুক্তিনির্ভর করে তোলা, যাকে এক কথায় ডিজিটালাইজেশন বলা হয়ে থাকে। বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তিনির্ভর ডকুমেন্টের গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি, একসময় আমাদের দেশের পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা অনেক দেশেই কম ছিল, সেই পাসপোর্ট যখন সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর মেশিন রিডেবল পাসপোর্টে (ই-পাসপোর্ট) রূপান্তর করা হলো, তখন এর গ্রহণযোগ্যতা অনেকগুণ বেড়ে গেল।

    ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে সরকার দেশের সব নাগরিকের জন্য ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) চালু করেছে, যেহেতু এনআইডি সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর একটি ডকুমেন্ট, তাই এর গ্রহণযোগ্যতা শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয়, দেশের বাইরেও অনেক বেশি। অথচ বিদেশিরা আগে আমাদের দেশের কাগজপত্র খুব সহজে বিশ্বাস করতে চাইত না। এখানেই দৃশ্যমান হয় ডিজিটাল বাংলাদেশের গুরুত্ব ও সুবিধা।

    আবার বর্তমান যুগে সবকিছু ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর না করতে পারলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যে কী মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে, তার দৃষ্টান্ত আমাদের দেশের ব্যাংক খাত। দেড় যুগ আগে ডিজিটাল বাংলাদেশের সূচনা হলেও দেশের ব্যাংক খাত সেভাবে প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠতে পারেনি কিংবা প্রযুক্তিনির্ভর হলেও রয়েছে সমন্বয়হীনতা। বিচ্ছিন্নভাবে একেক ব্যাংক একেক রকম প্রযুক্তির ব্যবহার করছে ঠিকই, কিন্তু তাতে প্রকৃত ডিজিটাল ব্যাংকিং থেকে আমাদের দেশের ব্যাংক খাত অনেক দূরে। আজ বিশ্বের নামকরা সব ব্যাংক যে আমাদের দেশের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করছে তার কয়েকটি সুনির্দিষ্ট কারণের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারে আমাদের ব্যাংকগুলোর পিছিয়ে থাকা।

    ডিজিটাল বাংলাদেশের হাত ধরে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে বাংলাদেশকে প্রযুক্তি ব্যবহারে অনেক উন্নত হতে হবে এবং সেই উদ্যোগ সফল করতে স্মার্ট বাংলাদেশ এ মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী এক কর্মপরিকল্পনা। অনেকেই হয়তো বলার চেষ্টা করবেন, দেশকে প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য স্মার্ট বাংলাদেশ নামের স্লোগানের কী প্রয়োজন? প্রয়োজন অবশ্যই আছে। স্মার্ট বাংলাদেশ তো শুধু একটি স্লোগান নয়, আগামী দুই যুগ ধরে চলবে এমন এক বিশাল কর্মযজ্ঞের নাম স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ।

    চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুফল গ্রহণের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হলে প্রয়োজন স্মার্ট সিটিজেন। সামান্য চোখ-কান খোলা রাখলেই ভবিষ্যতে যাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকবে, তারাই ভালো কাজ পাবে। যাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকবে না, তারা কাজ হারাবে। তবে সবাই যে কাজের অযোগ্য হয়ে যাবে, তা মোটেই নয়। অনেক বেশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ফলে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ফলে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বর্তমানের চেয়ে ৫-১০ গুণও বাড়তে পারে। ভবিষ্যতের এ অদম্য অগ্রযাত্রায় সবাইকে শামিল হতে হবে। আমাদের জনসংখ্যার বিরাট অংশ তরুণ জনশক্তি। তাদের দক্ষ ও যোগ্য করতে পারলেই নতুন প্রজন্ম পাবে নতুন এক বাংলাদেশ।

View Answer Discuss in Forum Workspace Report

498 . শিষ্টাচার (প্রবন্ধ রচনা করুন)

  • শিষ্টাচার রচনা


    ভূমিকা
    আচরণে বিনয় ও পরিশীলিত রুচিবোধের সমন্বিত অভিব্যক্তির নাম শিষ্টাচার। শিষ্টাচার সুন্দর মনের মাধুর্যময় আচরণিক প্রকাশ। মানুষের মাঝে লালিত সুন্দরের প্রকাশ তাঁর চরিত্র। শিষ্টতা সেই সুন্দরের প্রতিমূর্ত রূপ । শিষ্টতা মানুষের চরিত্রকে করে আকর্ষণীয়। যে মানুষ যত বেশি শিষ্ট, অন্যের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও তত বেশি।

    শিষ্টাচার কি
    সাধারণভাবে আচার-আচরণ ও কথাবার্তায় বিনয়, নম্রতা আর সৌজন্যের পরিচয়ের নাম শিষ্টাচার । আচরণে মার্জিত না হলে, ব্যবহারে উগ্রতা পরিহার না করলে মানুষ শিষ্টাচারী হতে পারে না । স্বভাবে দাম্ভিকতা ও কর্কশতা পরিহার করতে না পারলে মন মাধুর্যময় হয় না। মানবিক সত্তা যতই চরিত্রের মাধুর্য অর্জন করে ততই সে হয়ে ওঠে স্বভাবে শিষ্ট। শিষ্টতা ব্যক্তির আচরণকে করে মার্জিত, বাচনকে করে সৎ ও সুললিত। শিষ্টাচারহীন মানুষ সবসময় উদ্ধৃত থাকে। তার আচরণে প্রাধান্য পায় অবজ্ঞা, ঔদ্ধত্য, দুর্ব্যবহার ও দুর্মুখতা । অহংকার অন্যকে ছোট ভাবতে প্ররোচিত করে। কিন্তু শিষ্টতা মানুষকে সম্মান করতে প্রণোদনা দেয়।


    শিষ্টাচারের গুরুত্ব
    শিষ্টাচার ব্যক্তিস্বভাবে দেয় আলোর দীপ্তি। সে আলো ব্যক্তির পরিমণ্ডল থেকে ছড়িয়ে পড়ে গোটা সমাজে, রাষ্ট্রে। এর আলোতে উজ্জ্বল ব্যক্তির আত্মিক মুক্তির সাথে যোগ হয় মানবিক সৌহার্দা ও সম্প্রীতি। শিষ্টজন তাঁর সৌজন্য আর বিনয়ের মাধ্যমে সকলের প্রিয়তা অর্জন করেন, অর্জন করেন অন্যের আস্থা। অন্যের সহানুভূতি, প্রীতি ও সম্মান লাভ করার জন্যে শিষ্টজনই উত্তম। তাই সামাজিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার জন্যে শিষ্টাচারের বিকল্প নেই। এতে করে আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে সকলের আন্তরিকতা প্রকাশ পায়। চূড়ান্ত পর্যায়ে সমাজ হয় শান্তি ও সম্প্রীতির আকর।

    ছাত্রজীবনে শিষ্টাচার
    জ্ঞানার্জনে নিষ্ঠা, অভিনিবেশ আর শৃঙ্খলাবোধের পাশাপাশি ছাত্রজীবনে শিষ্টাচার অনুশীলন খুবই জরুরি। সৌজন্য ও শিষ্টাচারের ছোঁয়াতেই ছাত্র হয় বিনীত ও ভদ্র। কোনো ছাত্রের কাছে অমার্জিত, বৃঢ় ও দুর্বিনীত আচরণ কখনো কাম্য নয়। শিষ্টাচার ও সৌজন্য ছাত্রজীবনে মনুষ্যত্ব অর্জনের সোপান। সৌজন্য ও শিষ্টাচারের অভাব ঘটলে ছাত্রের জীবন থেকে ভালোবাসা, মমতা, সহানুভূতি, বিনয় ইত্যাদি সুকুমার বৃত্তি হারিয়ে যায়। সে হয়ে ওঠে দাম্ভিক, স্বার্থপর ও নিষ্ঠুর। নৈতিক চরিত্রের উৎকর্ষের জন্যে তাই ছাত্রজীবনেই ব্যবহারে ভব্যতা আর শিষ্টতার সম্মিলন ঘটানোর কোনো বিকল্প নেই।


    শিষ্টাচার ও সমাজজীবন
    সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিটি ক্ষেত্রেই শিষ্টাচারের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তা না হলে সমাজে দেখা দেয় অসহিঞ্চুতা, উচ্ছৃঙ্খলতা ও নিষ্ঠুরতা । শিষ্টাচারের অভাব ঘটলে সমাজ হয়ে ওঠে প্রীতিহীন। সমাজ আচ্ছন্ন হয় বিদ্বেষ, হিংসা, হানাহানি আর অশান্তিতে। তা সমাজজীবনে চরম বিপর্যয় ডেকে আনে। শিষ্টাচারহীন সমাজ হয়ে ওঠে অন্তঃসারশূন্য, বিবেকহীন। সমাজে সৌন্দর্য আর সুকুমার প্রবৃত্তিগুলো হারিয়ে যেতে বসে। প্রেম, প্রীতি ও মমতার অভাবে মানুষ হয়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে স্বার্থান্বেষী ও আত্মকেন্দ্রিক।

    আশাকরি শিষ্টাচার রচনা আপনাদের অনেক কাজে আসবে। এই রচনাটি পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হন তবে আমার খুব ভালো লাগবে।

    শিষ্টাচার অর্জনের উপায়

    শিষ্টাচার আপনা-আপনি মানবহৃদয়ে জন্ম নেয় না। একে অর্জন করে নিতে হয়। এ জন্য শিষ্টাচারের চর্চা শুরু করতে হয় শিশুকাল থেকেই। শৈশবে সৌজন্যবোধের পাঠ নিলে ভবিষ্যতে শিশু মার্জিত স্বভাবের অধিকারী হয়। তাই শিশু কোন পরিবেশে, কার সাহচর্যে, কীভাবে বেড়ে উঠছে সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশু পরিবার-পরিজন, সঙ্গী-সাথি কিংবা প্রতিবেশী যাদের সাহচর্যে থাকে তাদের কাছ থেকেই আচরণ শেখে। তাই সৎসঙ্গ শিষ্টাচারী হতে সাহায্য করে। স্কুল-কলেজেও শিক্ষার্থীরা শিষ্টাচারের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়। সংস্কৃতি চর্চা ও রুচিবান মানুষের সংসর্গও শিষ্টাচার  শিক্ষার অনুকূল। ভালো বইও একজন সৎ অভিভাবকের মতোই শিষ্টাচার শেখাতে পারে।

    উপসংহার
    শিষ্টাচার হচ্ছে সৎ চরিত্র গড়ার অন্যতম বুনিয়াদ । মার্জিত, রুচিশীল ও সৎ চরিত্রবান ব্যক্তি সমাজ ও জাতীয় জীবনে রাখতে পারেন বিশেষ অবদান। পক্ষান্তরে অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতি শিষ্টাচারের অন্তরায়। তা প্রতিনিয়ত মানবিক মূল্যবোধগুলো ধ্বংস করে ব্যক্তির চরিত্রকে কলুষিত করতে পারে। মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ে জাতি হয়ে পড়তে পারে দুর্বল ও ক্ষীণপ্রাণ। সাম্প্রতিককালে তরুণ ও যুবসমাজের মধ্যে যে অশোভনতা, ঔদ্ধত্য ও উচ্ছৃঙ্খলতার প্রকাশ ঘটছে তা পরিভোগপ্রবণ পণ্যসংস্কৃতি বিস্তারের ফল। এটা জাতির লাবণ্যহীন হওয়ারই লক্ষণ। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনে সুস্থতা ও সমৃদ্ধি অর্জনে তাই আমাদের শিষ্টাচারের চর্চা করা উচিত।

View Answer Discuss in Forum Workspace Report