451 .
- বেলাকে অতিক্রান্ত - অবেলা
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
452 . ৬০ বছর পূর্তি (এক কথায় প্রকাশ করুন)
- ৬০ বছর পূর্তি = হীরকজয়ন্তী
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
453 . সুনামীর তান্ডবে অনেকেই সর্বশ্রান্ত হয়েছে। (বাক্য শুদ্ধ করুন)
- সুনামির তাণ্ডবে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছে
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
454 . অনুচ্ছেদ লিখুন: 'বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ'
-
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলাদেশের নন, আন্তর্জাতিক বিশ্বের মহান নেতা ছিলেন। তিনি প্রথমে নিজেকে, পরে আওয়ামী লীগকে, তারপর বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার লক্ষ্যে তৈরি করেছেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনি উপলব্ধি করেন এই পাকিস্তান বাঙালিদের জন্য হয়নি। একদিন বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা বাঙালিদেরই হতে হবে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করতে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে স্বার্থান্বেষী মহল কুতর্ক জারি রেখেছে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে যদি বঙ্গবন্ধু অংশগ্রহণ না করতেন বা যদি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেতেন, তাহলে স্বাধীনতা ঘোষণা করার সুযোগ পেতেন না, অথবা হয়তো পেতেন তবে অনেক পরে। বঙ্গবন্ধুকে অনেকেই বলেছিলেন, ‘এলএফওর (লিগাল ফ্রেম ওয়ার্ক অর্ডার) অধীনে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে গিয়ে কোনো লাভ হবে না।’ তাদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এলএফও! এই নির্বাচনকে গণভোট হিসেবে আখ্যায়িত করে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো এবং প্রমাণ করবো কে এই দেশের নেতা।
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
455 . আশৈশব (ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় করুন)
- অব্যয়ীভাব সমাস
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
456 . মীনাক্ষী (ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় করুন)
-
মীনের মত অক্ষি যার - এর ব্যাসবাক্য হচ্ছে মীনাক্ষী
মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
457 . দিলদরিয়া (ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় করুন)
- দিল রূপ দরিয়া - দিলদরিয়া। এগুলো হলো রূপক কর্মধারায় সমাস।
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
458 . অনুচ্ছেদ লিখুন: "বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট”
- বঙ্গবন্ধু-১ বাংলাদেশের প্রথম ভূস্থির যোগাযোগ ও সম্প্রচার উপগ্রহ। এটি ২০১৮ সালের ১১ মে (বাংলাদেশ সময় ১২ মে) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়।[৩] এর মধ্য দিয়ে ৫৭ তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশের তালিকায় যোগ হয় বাংলাদেশ। এই প্রকল্পটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন কর্তৃক বাস্তবায়িত হয় এবং এটি ফ্যালকন ৯ ব্লক ৫ রকেটের প্রথম পণ্য উৎক্ষেপণ ছিল।
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
459 . বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পিত রূপ বিদ্যাসাগরের রচনায় পাওয়া যায়' এ মন্তব্যের যথার্থতা নিরূপণ করুন।
-
আজ ২৯ জুলাই। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১২৪তম মৃত্যুদিবস। ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে তিনি মারা যান।ভারতীয় উপমহাদেশে উনিশ শতকের নবজাগরণের মধ্য দিয়ে আধুনিকতার সূত্রপাত ঘটে। ওইসময় বহুকীর্তিমান বাঙালির পদপাতে মুখরিত হয়েছিল। আর এই নবজাগরণের প্রধান চরিত্র বিদ্যাসাগর। পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর।
বাংলা গদ্য ভাষাকে গড়ে তোলা এবং শিল্পিত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। শুধু কি গদ্য প্রণয়নের রূপরেখাই প্রণয়ন করেছিলেন? না। বাংলা বাংলা বর্ণমালার আধুনিক রূপ দিয়েছেন, প্রণয়ন করেছেন বাংলা ভাষার ব্যাকরণ।
ঈশ্বরচন্দ্র ছিলেন ইংরেজ সরকারের বড় শিক্ষা কর্মকর্তা। তিনি তার দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালনের পাশাপাশি এদেশের মানুষের কথা ভেবেছেন। তিনি জানতেন ইংরেজি শিক্ষা ছাড়া মুক্তি অসম্ভব তাই তিনি এর প্রতি গুরুত্বারোপ করেছিলেন। এ অঞ্চলের মানুষগুলোকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে অসংখ্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ‘আহমদ শরীফ অধ্যাপক চেয়ার’ আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, যখন ঈশ্বরচন্দ্রের কর্মজীবন শুরু হয় বাংলা গদ্য তখনও খুব পরিচ্ছন্ন রূপ লাভ করেনি, তিনিই সর্বপ্রথম বাংলা গদ্যের একটি পরিচ্ছন্ন রূপ দেন। এজন্য বিদ্যাসাগরকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়। বাংলা গদ্য ভাষাকে গড়ে তোলা এবং ভাষাকে শিল্পিত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। বাক্যে কর্তা, কর্ম, করণ, ক্রিয়া’র ব্যবহার কীভাবে হবে তা তিনি ঠিক করেছেন। শুরুতে বাংলা বর্ণমালা বর্তমানের রূপে ছিল না, এটি ছিল বিক্ষিপ্ত আকারে। বিদ্যাসাগর এটিকে একটি রূপ দিয়েছেন, মোটামুটি সেটিই এখনও চলছে।
অধ্যাপক আবুল কাসেম আরো বলেন, বিদ্যাসাগর সংস্কৃত কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। যদিও এ কলেজে মূল পাঠ্য ছিলো হিন্দু ধর্ম, হিন্দু শাস্ত্র, তবুও তার চিন্তা ভাবনার বিকাশ ঘটেছিলো ঈশ্বর ও অলৌকিকতাকে বাদ দিয়ে। তিনি বাংলার মানুষকে ধর্ম ও পরকালীন জীবনের চিন্তাধারার সীমাবদ্ধতা থেকে বের করে ইহজাগতিক কল্যানের কথা ভাবতে উদ্ভুদ্ধ করেন। যাকে ইংরেজিতে বলে “স্যাকুলারিজম”, যার মানে হলো ইহলৌকিকতা। অনেকেই এটিকে ধর্মনিরপেক্ষতা বলেন, এটি যথাযথ নয়।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, যাকে আমরা সাহিত্য বলি সেটা বিদ্যাসাগরই এক অর্থে প্রথম শুরু করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তার প্রকাশিত গ্রন্থ ’বেতাল পঞ্চংবিংশতি’কেই আমরা বাংলা ভাষায় আধুনিককালে লেখা প্রথম সাহিত্যিক গদ্য বলি। এরপরে তিনি আরো কিছু বই অনুবাদ করেছিলেন সংস্কৃত এবং ইংরেজি থেকে। তারা এই কাজের মধ্য দিয়ে একদিকে আমরা বাংলা ভাষায় অন্য ভাষার সাহিত্য পেলাম অন্যদিকে বাংলা ভাষায় সাহিত্যকর্ম লিখন পদ্ধতির একটা নমুনাও পাওয়া পেলাম। বাংলা ভাষায় এর সুগভীর প্রভাব রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যাসাগরের সবচেয়ে বড় অবদান বলে যেটিকে উল্লেখ করা হয় তা হলো বাংলা গদ্যে। উনিশশতকে এক ধরেনের নতুন গদ্য লেখা শুরু হয়েছিলো, সেই গদ্যটা ছিলো একটু বিকট, একটু খারাপ। কতগুলো সংস্কৃত শব্দ, নতুন ধরনের বাক্য তখনও ঠিক গুছিয়ে উঠতে পারে নাই। ওই বিকট গদ্যটা গুছিয়ে কিভাবে সুশৃঙ্খল এবং শিল্পসম্মত হতে পারে তা দেখাতে পেরেছেন। এজন্য রবীন্দনাথ ঠাকুর বলেছিলেন বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যের প্রথম যথার্থ শিল্পী।
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
460 . বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথই সার্থক ছোট গল্প রচনার পথ প্রদর্শক।' এ মন্তব্যের যৌক্তিকতা বিচার করুন।
-
রবীন্দ্রনাথ ছোটগল্প লেখা শুরু করেন ১২৯৮ বাংলা সনে। তখন থেকে ১৩১০ সনের মধ্যে তার বেশিরভাগ গল্প রচিত। তার একটি বিখ্যাত গল্প ‘পোস্টমাস্টার’ ১২৯৮ সালে লেখা। এর কিছুদিন আগে থেকে তিনি জমিদারি দেখাশোনার ভার নিয়েছেন। তার দিন কাটছে পদ্মার ওপরে নৌকায় ভেসে ভেসে শাহজাদপুর ও শিলাইদহে। আনন্দময় বৈচিত্র্যে ভরপুর এ সময়ের জীবনযাত্রা। তিনি পদ্মাবোটে চড়ে পাড়ি জমিয়েছেন আত্রাই, বড়াল, নাগর, করতোয়া, পদ্মা আর যমুনায়। বাংলাদেশের একটি নির্জন প্রান্ত; তার নদী তীর, উন্মুক্ত আকাশ, বালুচর, অবারিত মাঠ, ছায়া সুনিবিড় গ্রামে সহজ অনাড়ম্বর পল্লীজীবন, অভাবক্লিষ্ট অথচ শান্তসহিষ্ণু গ্রামবাসী- কবি বিমুগ্ধ বিস্ময়ে, পুলকে, শ্রদ্ধায় ও বিশ্বাসে এসবের অপরিসীম সৌন্দর্য আকণ্ঠ পান করেছেন। ধীরে ধীরে বাংলাদেশের পল্লীজীবনের সুখ-দুঃখের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ পরিচয় শুরু হয়। পল্লীজীবনের নানা বেদনা আর আনন্দ যখন তার মনকে অধিকার করে বসলো, তখন তার ভাব ও কল্পনার মধ্যে আপনাআপনি বিভিন্ন গল্প রূপ পেতে শুরু করলো। ১৮৯৪ সালের ২৭ জুন শিলাইদহ থেকে একটি চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘আজকাল মনে হচ্ছে, যদি আমি আর কিছুই না করে ছোট ছোট গল্প লিখতে বসি তাহলে কতকটা মনের সুখে থাকি এবং কৃতকার্য হতে পারলে পাঁচজন পাঠকেরও মনের সুখের কারণ হওয়া যায়। গল্প লিখবার একটা সুখ এই, যাদের কথা লিখব তারা আমার দিনরাত্রির অবসর একেবারে ভরে রেখে দেবে, আবার একলা মনের সঙ্গী হবে, বর্ষার সময় আমার বদ্ধঘরের সঙ্কীর্ণতা দূর করবে এবং রৌদ্রের সময় পদ্মা তীরের উজ্জ্বল দৃশ্যের মধ্যে আমার চোখের পরে বেড়িয়ে বেড়াবে’।
ছোটগল্প রচনা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ নিজের সম্পর্কেই করে গেছেন সহজ ও সাবলীল স্বীকারোক্তি, “আমি প্রথমে কেবল কবিতাই লিখতুম, গল্পে-টল্পে বড় হাত দিই নাই, মাঝে একদিন বাবা ডেকে বললেন, ‘তোমাকে জমিদারির বিষয়কর্ম দেখতে হবে’। আমি তো অবাক; আমি কবি মানুষ, পদ্য-টদ্য লিখি, আমি এসবের কী বুঝি? কিন্তু বাবা বললেন, ‘তা হবে না, তোমাকে এ কাজ করতে হবে’। ‘কী করি? বাবার হুকুম, কাজেই বেরুতে হলো। এই জমিদারি দেখা উপলক্ষে নানা রকমের লোকের সঙ্গে মেশার সুযোগ হয় এবং এ থেকেই আমার গল্প লেখারও শুরু হয়”।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্পে মানব জীবনের দ্বিধা-বিরোধ, আনন্দ-হাসি আর স্বাভাবিক জীবনাচারের বিষয়গুলো মুখ্য হয়ে ওঠে। গল্পের ধারাবাহিকতায় উঠে আসে সমাজ আর শ্রেণি বৈষম্যের নানা গতি-প্রকৃতি। সাহিত্যিক জীবনের সূচনালগ্নে রবীন্দ্রনাথ ছোটগল্পে প্রবেশ করলেও তার স্বীয় বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল ছোটগল্পগুলোর সূত্রপাত ঘটে ১৮৯১ সালে। রবীন্দ্রনাথ মূলত কবি এবং তার অধিকাংশ কবিতাই লিরিকধর্মী। এই গীতিময়তা তার ছোটগল্পেও প্রবলভাবে উপস্থিত। প্রকৃতির সঙ্গে পরিপূর্ণ একাত্মবোধ, জীবনের আপাততুচ্ছ ব্যাপারকেও পরম রমণীয় ও অপূর্ব রহস্যময় হিসেবে অনুভব করা, এসবের প্রতি অসম্ভব শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস, নিজেকে একান্তভাবে নির্লিপ্ত করে দিয়ে একমনে জীবনকে প্রকৃতির সব অভিব্যক্তির মধ্যে উপভোগ করা- এসবই রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পগুলোতে অপূর্ব রসে অভিষিক্ত হয়ে উঠেছে। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বজনীনভাবে আমৃত্যু গভীরভাবে ধ্যান-জ্ঞান বিলিয়ে দেওয়ার সাধনায় নিমিত্ত থেকে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। কখনও তিনি নিজেকে মেলে ধরেছেন কবিতায়, মানুষের জীবনের শোকগাথাকে তুলে ধরেছেন ছোটগল্প-উপন্যাসে, কখনও বিজয়মুকুটে আসীন হয়েছেন সঙ্গীতের মূর্ছনায়। মানবসত্তাকে বিশ্বপ্রকৃতির কাছে প্রকাশ করতে, বিশেষভাবে বাঙালিকে শেখাতে চেয়েছিলেন- বিশ্বজনীন হয়ে বিশ্বমানবতার পথে হাঁটতে। তাই রবীন্দ্রনাথ তার মহৎ সাহিত্যকর্মের জন্যই মানুষের কাছে বাঙালির পাঠকের কাছে চিরকাল বেঁচে থাকবেন। বাংলা, বাংলা সাহিত্য আর রবীন্দ্রনাথ একই সত্তা। একটাকে বাদ দিয়ে অন্যটার পরিপূর্ণতা অর্জন কখনই সম্ভব নয়।
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
461 . কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যে প্রেম ও দ্রোহ উভয় চেতনা প্রবল রোমান্টিকতায় পূর্ণ উক্তিটি যুক্তিসহ বিশ্লেষণ করুন।
-
‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরি, আর হাতে রর্ণ-তূর্য্য’—এমনই দুর্দান্ত লাইন রচনার স্রষ্টা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন প্রেম ও দ্রোহের এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি তার কাব্য ও গানে যেমন বিদ্রোহের ঝঙ্কার তুলেছিলেন, তেমনি প্রেমের মায়াজালে সবাইকে আকৃষ্টও করেছিলেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি স্বাধীনতার কথা বলার পাশাপাশি প্রেমেও পড়েছিলেন বারবার। ভালোবেসে প্রিয় মানুষের সঙ্গে ঘরও বেঁধেছিলেন বহু বাধা উপেক্ষা করে। মহান এই কবিকে শুধু ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে আখ্যা দিলে নিঃসন্দেহে তার মানসকে খণ্ডিত করে দেখা হবে। কারণ তিনি দ্রোহের কবি যেমন সত্য, প্রেমের কবি হিসেবেও ততটা সত্য। তার কাব্য ও গানে দ্রোহের চেতনা এসেছে নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষদের জাগানোর জন্য আর চিরন্তন প্রেমের বাণীতে এসেছে শাশ্বত কালের মানবহূদয়ের আবেদন।
এই দ্রোহী চেতনার জন্য তাকেও যে কম নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে, এমন নয়! ব্রিটিশ রোষানলে পড়ে তাকে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে শুধু তার লেখনীর জন্য। সে সময় তার রচিত অনেক সৃষ্টি ও বই বাজেয়াপ্তও করেছিল ব্রিটিশ সরকার। মানসিক কষ্ট নিয়ে নজরুল জেলে বসেই আবার রচনা করতে থাকেন বিদ্রোহী কবিতা ও সংগীত। যার মননে ও কর্মে ছিল বিদ্রোহ, তাকে কীভাবে বিদ্রোহী রচনা থেকে বিরত রাখা যায়! তিনি লিখেছেন—‘কারার ঐ লৌহকপাট /ভেঙে ফেল কর রে লোপাট /রক্ত জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী /কারার ঐ লৌহকপাট...’
নজরুলের কাব্যে রোমান্টিক কবিসত্তার সঙ্গে বিরহ-বেদনা একাত্ম হয়ে গেছে। প্রেমবিষয়ক কাব্যেও তার বিক্ষুব্ধ মনের পরিচয় পাওয়া যায়। তাই প্রেমের বেদনায় তিনি মানবিক হয়ে উঠেছেন। প্রিয়াকে হারানোর স্মৃতির মধ্যে খুঁজে ফিরেছেন হারানো প্রেমকে। তার প্রিয়া হয়েছে নিত্যকালের সঙ্গী। হূদয়ের গভীর আর্তি তার প্রেমিক-কবিসত্তাকে চিরজাগ্রত করে তুলেছে। বলগাহারা নজরুল প্রিয়াবিরহকে একটা সময় গিয়ে মেনে নিয়েছিলেন এবং পরজনমে আবার মিলিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় লিখেছিলেন—‘পরজনমে দেখা হবে প্রিয় ভুলিও মোরে হেতা ভুলিও...’
নজরুল চেয়েছিলেন তার প্রিয়ার খোঁপার বাঁধনকে উন্মুক্ত করতে। যে উন্মুক্ততায় প্রেমের কোনো সীমাবদ্ধতা থাকবে না। প্রেম হবে চিরন্তন, সার্বজনীন। প্রত্যেকে যে প্রেমের আকাঙ্ক্ষায় উন্মত্ত থাকে, সে উপলব্ধিও নজরুল করেছিলেন। তাই তিনি লিখেছেন, ‘আমরা এই পৃথিবীতে প্রেমের পূজারী হয়ে থাকি।’মানুষকে তিনি ভালোবাসতেন, তাই মানুষের মহত্তম বৃত্তি প্রেমকে তিনি আত্ম-অনুভবে দীপ্ত করে তুলেছিলেন তার কাব্য ও গানে। মূলত আপন জীবনের গভীর বঞ্চনাবোধ থেকে হয়েছিলেন বিদ্রোহী আর প্রেমের ক্ষেত্রে হয়েছিলেন চিরবিরহী। তাই তার কাব্য ও গানে প্রেম ও দ্রোহী সত্তা একীভূত হয়ে গেছে। তিনি হয়ে উঠেছেন সবার প্রিয় কবি।
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
462 . 'বিষাদসিন্ধু' মীর মশাররফ হোসেনের সাহিত্য প্রতিভার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। এ প্রসঙ্গে আপনার মতামত ব্যক্ত করুন।
-
বিষাদ-সিন্ধু হল মীর মশাররফ হোসেন রচিত একটি মহাকাব্যিক উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় ও প্রাচীনতম উপন্যাসগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। হিজরি ৬১ সালে সংঘটিত কারবালার যুদ্ধ ও এর পূর্বাপর ঘটনাবলী এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য বিষয়।বিষাদ-সিন্ধুর মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে- মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেনের মৃত্যুর জন্য দায়ী ঘটনাসমূহ।[১] অবশ্য ইমাম হোসেনের মৃত্যুর ফলে যে সকল ঘটনা ঘটেছিল তারও বর্ণনা রয়েছে এ গ্রন্থে। বিষাদ-সিন্ধু উপন্যাসের প্রধান চরিত্রগুলির সন্ধান ইতিহাসে পাওয়া যায়, কিন্তু কোনো কোনো অপ্রধান চরিত্রের উল্লেখ বা সন্ধান ঐতিহাসিক কোনো গ্রন্থে পাওয়া যায় না। কিন্তু গবেষকের সিদ্ধান্ত- ‘যেহেতু ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করেই এই গ্রন্থ রচিত হয়েছে, সুতরাং এটিকে ঐতিহাসিক উপন্যাস বলা যায়।’[১] এতে একই সঙ্গে উপন্যাসের চরিত্রচিত্রণ, মানবজীবনের দুঃখ-যন্ত্রণা, হিংসা-বিদ্বেষ ইত্যাদি যেমন চিত্রিত হয়েছে তেমনি ইতিহাসের পটভূমিকায় সিংহাসন নিয়ে দ্বন্দ্ব, সংগ্রাম, রক্তপাত, হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি বর্ণিত হয়েছে। ঐতিহাসিক উপন্যাস হলেও ইতিহাসের দিক থেকে এতে উল্লেখিত সকল ঘটনা নির্ভরযোগ্য নয়।
এটি কাব্যিক শৈলীতে রচিত এবং এতে অনেক নাটকীয় পর্ব রয়েছে। এসময় বাংলা উপন্যাস লেখার চল খুব বেশি ছিল না। মীর মশাররফ হোসেনসহ অন্যান্য লেখকরা এসময় বাংলা উপন্যাসের ধারা সৃষ্টি করছিলেন। তৎকালীন রীতি অনুযায়ী এই উপন্যাস সাধু ভাষায় লেখা হয়েছে। অনেক বাঙালি মুসলিম এই বইকে ধর্মীয় জ্ঞানে শ্রদ্ধা করে থাকেন, বিশেষত প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
463 . 'সাহিত্যে খেলা' প্রবন্ধে প্রমথ চৌধুরী সাহিত্যের উদ্দেশ্য সম্পর্কে যে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তা আলোচনা করুন।
- সাহিত্যে খেলা জগৎ-বিখ্যাত ফরাসি ভাস্কর রোদ্যাঁ, যিনি নিতান্ত জড় প্রস্তরের দেহ থেকে অসংখ্য জীবিতপ্রায় দেব-দানব কেটে বার করেছেন তিনিও, শুনতে পাই, যখন-তখন হাতে কাদা নিয়ে, আঙুলের টিপে মাটির পুতুল ত’য়ের করে থাকেন। এই পুতুল গড়া হচ্ছে তাঁর খেলা। শুধু রোদ্যা কেন, পৃথিবীর শিল্পীমাত্রেই এই শিল্পের খেলা খেলে থাকেন। যিনি গড়তে জানেন, তিনি শিবও গড়তে পারেন বাঁদরও গড়তে পারেন। আমাদের সঙ্গে বড়ো বড়ো শিল্পীদের তফাত এইটুকু যে, তাঁদের হাতে এক করতে আর হয় না। সম্ভবত এই কারণে কলারাজ্যের মহাপুরুষদের যা-খুশি-তাই করবার যে অধিকার আছে, ইতর শিল্পীদের সে অধিকার নেই। স্বর্গ হতে দেবতারা মধ্যে মধ্যে ভূতলে অবতীর্ণ হওয়াতে কেউ আপত্তি করেন না, কিন্তু মর্তবাসীদের পক্ষে রসাতলে গমন করাটা বিশেষ নিন্দনীয়। অথচ এ কথা অস্বীকার করবার জো নেই যে, যখন এ জগতে দশটা দিক আছে তখন সেই-সব দিকেই গতায়াত করবার প্রবৃত্তিটি মানুষের পক্ষে স্বাভাবিক। মন উঁচুতেও উঠতে চায়, নিচুতেও নামতে চায়। বরং সত্য কথা বলতে গেলে সাধারণ লোকের মন স্বভাবতই যেখানে আছে তারই চার পাশে ঘুরে বেড়াতে চায়, উড়তেও চায় না ডুবতেও চায় না। কিন্তু সাধারণ লোকে সাধারণ লোককে কি ধর্ম, কি নীতি, কি কাব্য, সকল রাজ্যেই অহরহ ডানায় ভর দিয়ে থাকতেই পরামর্শ দেয়। একটু উঁচুতে না চড়লে আমরা দর্শক এবং শ্রোতৃ-মণ্ডলীর নয়ন-মন আকর্ষণ করতে পারি নে। বেদীতে না বসলে আমাদের উপদেশ কেউ মানে না, রঙ্গমঞ্চে না চড়লে আমাদের অভিনয় কেউ দেখে না, আর কাষ্ঠমঞ্চে না দাঁড়ালে আমাদের বক্তৃতা কেউ শোনে না। সুতরাং জনসাধারণের চোখের সম্মুখে থাকবার লোভে আমরাও অগত্যা চব্বিশ ঘণ্টা টঙে চড়ে থাকতে চাই, কিন্তু পারি নে। অনেকের পক্ষে নিজের আয়ত্তের বহির্ভূত উচ্চস্থানে ওঠবার চেষ্টাটাই মহাপতনের কারণ হয়। এ-সব কথা বলবার অর্থ এই যে, কষ্টকর হলেও আমাদের পক্ষে অবশ্য মহাজনদের পথ অনুসরণ করাই কর্তব্য। কিন্তু ডাইনে-বাঁয়ে ছোটোখাটো গলিঘুঁজিতে খেলাচ্ছলে প্রবেশ করবার যে অধিকার তাঁদের আছে, সে অধিকারে আমরা কেন বঞ্চিত হব? গান করতে গেলেই যে সুর তারায় চড়িয়ে রাখতে হবে, কবিতা লিখতে হলেই যে মনের শুধু গভীর ও প্রখর ভাব প্রকাশ করতে হবে, এমন কোনো নিয়ম থাকা উচিত নয়। শিল্পরাজ্যে খেলা করবার প্রবৃত্তির ন্যায় অধিকারও বড়ো-ছোটো সকলেরই সমান আছে। এমন-কি, এ কথা বললেও অত্যুক্তি হয় না যে, এ পৃথিবীতে একমাত্র খেলার ময়দানে ব্রাহ্মণশূদ্রের প্রভেদ নেই। রাজার ছেলের সঙ্গে দরিদ্রের ছেলেরও খেলায় যোগ দেবার অধিকার আছে। আমরা যদি একবার সাহস করে কেবলমাত্র খেলা করবার জন্য সাহিত্যজগতে প্রবেশ করি, তা হলে নির্বিবাদে সে জগতের রাজা-রাজড়ার দলে মিশে যাব। কোনোরূপ উচ্চ আশা নিয়ে সে ক্ষেত্রে উপস্থিত হলেই নিম্নশ্রেণীতে পড়ে যেতে হবে।
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
464 . গৌড়ী অপভ্রংশের মাধ্যমে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে।' উক্তিটির যৌক্তিক ব্যাখ্যা করুন।
- বাংলা ভাষা গৌড়ী অপভ্রংশ থেকে তৈরি হইছে যার পূর্বসূরি হলো "পালি" ভাষা,অতএব বাংলা ভাষা ভ্রূণাবস্থায় পালির উপভাষা এবং নিষেকাবস্থায় পালি ছিলো এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়,সংস্কৃত কখনোই না।সংস্কৃত থেকে কোনোভাবেই বাংলার উৎপত্তি সম্ভব না।
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |
465 . অমিত্রাক্ষর ছন্দের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন।
-
অমিত্রাক্ষর ছন্দের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো :
ক) মাত্রাসংখ্যা নির্দিষ্ট। অর্থাৎ প্রতিটি চরণে ৮ ও ৬ মাত্রার দুটি পর্ব মিলে ১৪টি মাত্রা থাকে।
খ) চরণের শেষে মিত্রাক্ষর, মিল বা অন্ত্যমিল থাকে না।
গ) ভাব প্রবাহমান। অর্থাৎ একটি চরণে একটি নির্দিষ্ট ভাব প্রকাশ করতে হবে এমন কিছু নেই।
ঘ) চরণের শুরুতে, মাঝখানে বা শেষে বাক্যের শেষ বা শুরু হতে পারে।
ঙ) প্রয়োজন মতো যতিচিহ্নের ব্যবহার করা যায়।
View Answer | Discuss in Forum | Workspace | Report |